জান্নাত কেমন হবে?

জান্নাত কেমন হবে?

আল্লাহ তাআলা বলেন, নিশ্চয় পরহেযগাররা বাস করবে উদ্যান ও প্রস্রবণসমূহে । (তাদেরকে বলা হবে,) তোমরা শান্তি ও নিরাপওার সাথে তাতে প্রবেশ কর। আমি তাদের অন্তরে যে ঈর্ষা থাকবে তা দূর করে দেব; তারা ভ্রাতৃভাবে পরস্পর মুখোমুখি হয়ে আসনে অবস্থান করবে। সেথায় তাদেরকে অবসাদ স্পর্শ করবে না এবং তারা সেথা হতে বহিষ্কৃতও হবে না। (সূরা হিজর ৪৫-৪৮)

তিনি অন্য জায়গায় বলেন, “নিশ্চয় সাবধানীরা থাকবে নিরাপদ স্থানে-বাগানসমূহে ও ঝরনারাজিতে, ওরা পরিধান করবে মিহি ও পুরু রেশমি বস্ত্র এবং মুখোমুখি হয়ে বসবে। এরূপই ঘটবে ওদের; আর আয়াতলোচনা হুরদের সাথে তাদের বিবাহ দেব। সেখানে তারা নিশ্চিন্তে বিবিধ ফলমূল আনতে বলবে। (ইহকালে) প্রথম মৃত্যুর পর তারা সেখানে আর মৃত্যু আস্বাদন করবে না। আর তিনি তাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা করবেন। (এ প্রতিদান) তোমরা প্রতিপালকের অনুগ্রহস্বরূপ। এটাই তো মহাসাফল্য।” (সূরা দুখান ৫১-৫৭)

তিনি আরো বলেন, হে আমার বান্দাগণ! আজ তোমাদের কোন ভয় নেই এবং তোমরা দুঃখিতও হবে না। যারা আমার আয়াতে বিশ্বাস করেছিল এবং আত্মসমর্পনকারী (মুসলিম) ছিলে। তোমরা এবং তোমাদের সহ ধর্মিনীগণ সানন্দে জান্নাতে প্রবেশ কর। স্বর্ণের থালা ও পান পাএ নিয়ে ওদের মাঝে ফিরানো হবে, সেখানে রয়েছে এমন সমস্ত কিছু, যা মন চায় এবং যাতে নয়ন তৃপ্ত হয়। সেখানে তোমরা চিরকাল থাকবে। এটাই জান্নাত, তোমরা তোমাদের কর্মের ফলস্বরূপ যার অধিকারী হয়েছ। সেখানে তোমাদের জন্য রয়েছে প্রচুর ফলমূল, তা থেকে তোমরা আহার করবে। (সূরা যুখরুফ ৬৮-৭৩)

আল্লাহ অন্যএ বলেছেন, “পুণ্যবানগণ তো থাকবে পরম স্বাচ্ছন্দে। তারা সুসজ্জিত আসনে বসে দেখতে থাকবে। তুমি তাদের মুখমণ্ডলে স্বাচ্ছন্দের সজীবতা দেখতে পাবে। তাদেরকে মোহর আঁটা বিশদ্ধ মদিরা হতে পান করানো হবে। এর মোহর হচ্ছে কস্তুরীর। আর তা লাভের জন্যই প্রতিযোগিতারা প্রতিযোগিতা করুক। এর মিশ্রন হবে তাসনীমের (পানির)। এটা একটি প্রস্রবণ, যা হতে নৈকট্যপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা পান করবে। (সূরা মুত্বাফিফীন ২২-২৮)

এ মর্মে আরো অনেক আয়াত রয়েছে। এখানে কিছু হাদীস উল্লেখ করা হল-
১) আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেছেন, “জান্নাতে একটি বাজার হবে, যেখানে জান্নাতীগণ প্রত্যেক শুক্রবার আসবে। তখন উত্তর দিক থেকে বায়ু প্রবাহিত হবে, যা তাদের চেহারায় ও কাপড়ে সুগন্ধ ছড়িয়ে দেবে। ফলে তাদের শোভা- সৌন্দর্য আরো বেড়ে যাবে । তারপর তাঁরা রূপ-সৌন্দর্য বৃদ্ধি নিয়ে তাদের স্ত্রীগনের কাছে ফিরবে। তখন তাঁরা তাদেরকে দেখে বলবে, “আল্লাহর কসম! আপনাদের রূপ-সৌন্দর্য বেড়ে গেছে!” তাঁরাও বলে উঠবে, “আল্লাহর কসম! আমাদের যাবার পর তোমাদেরও রূপ-সৌন্দর্য বেড়ে গেছে!” (মুসলিম ২৮৩৩)

২) আবূ হুরাইরা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ বলেন, “মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘আমি আমার পুণ্যবান বান্দাদের জন্য জিনিস প্রস্তুত রেখেছি, যা কোন চক্ষু দর্শন করেনি, কোন কর্ন শ্রবন করেনি এবং যার সম্পর্কে কোন মানুষের মনে ধারণাও জন্মেনি। তোমরা চাইলে এ আয়াতটি পাঠ করতে পার; যার অর্থ, “কেউই জানে না তার জন্য তার কৃতকর্মের বিনিময় স্বরূপ নয়ন-প্রীতিকর কী পুরস্কার লুকিয়ে রাখা হয়েছে।” (সূরা সাজদাহ ১৭) (সহীহুল বুখারী ৩২৪৪, ৪৭৭৯,৪৭৮০)

৩) উক্ত রাবী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “জান্নাতে প্রথম প্রবেশকারী দলটির আকৃতি পূর্ণিমা রাতের চাঁদের মত হবে।তারপর তাদের পরের দলটি আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্রের ন্যায় জ্যোতির্ময় হবে। তারা জান্নাতে পেশাব করবে না, থুথু ফেলবে না, নাক ঝাড়বে না। তাদের চিরুনী হবে স্বর্ণের। তাদের ধুনুচিতে থাকবে সুগন্ধ কাঠ। তাদের স্ত্রী হবে আয়াতলোচনা হুরগণ। তারা সকলেই একটি মানব কাঠামো, আদি পিতা আদমের আকৃতিতে হবে (যাদের উচ্চতা হবে) ষাট হাত পর্যন্ত।” (সহীহুল বুখারী ৩২৪৫, ৩২৪৬, ৩২৫৪, ৩৩২৭)

৪) আবূ সাইদ খুদরী (রাঃ) ও আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেছেন, “জান্নাতীরা যখন জান্নাতে প্রবেশ করে যাবে, তখন একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করবে যে, তোমাদের জন্য এখন অনন্ত জীবন; তোমরা আর কখনো মরবে না। তোমাদের জন্য এখন চির সুস্বাস্থ্য; তোমরা আর কখনো অসুস্থ হবে না। তোমাদের জন্য এখন চির যৌবন; তোমরা আর কখনো বৃদ্ধ হবে না। তোমাদের জন্য এখন চির সুখ ও পরমানন্দ; তোমরা আর কখনো দুঃখ-কষ্ট পাবে না।” (মুসলিম ২৮৩৬,২৮৩৭)

মূসা (রাঃ) বললেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আর সর্বোচ্চ স্তরের জান্নাতী কারা হবে?’ আল্লাহ তাআলা বললেন, ‘তারা হবে সেই সব বান্দা, যাদেরকে আমি চাই। আমি স্বহস্তে যাদের জন্য সম্মান-বৃক্ষ রোপণ করেছি এবং তার উপর সীল-মোহর অংকিত করে দিয়েছি (যাতে তারা ব্যতিরেকে অন্য কেউ তা দেখতে না পায়)। সুতরাং কোন চক্ষু তা দর্শন করেনি, কোন কর্ন তা শ্রবন করেনি এবং কোন মানুষের মনে তা কল্পিতও হয়নি।” (মুসলিম ১৮৯, তিরমিযী ৩১৯৮)

৫) ইবনে মাসঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (রাঃ) বললেন, “সর্বশেষে যে ব্যক্তি জাহান্নাম থেকে বের হয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে, তার সম্পর্কে অবশ্যই আমার জানা আছে। এক ব্যক্তি হামাগুড়ি দিয়ে (বা বুকে ভর দিয়ে) চলে জাহান্নাম থেকে বের হবে। তখন আল্লাহ আযযা অজাল্ল বলবেন, “যাও জান্নাতে প্রবেশ কর।” তখন সে জান্নাতের কাছে এলে তার ধারণা হবে যে, জান্নাত পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। ফলে সে ফিরে এসে বলবে, ‘হে প্রভু! জান্নাত তো পরিপূর্ণ দেখলাম।’ আল্লাহ আযযা অজাল্ল বলবেন, “যাও, জান্নাতে প্রবেশ কর।” তখন সে জান্নাতের কাছে এলে তার ধারণা হবে যে, জান্নাত তো ভরে গেছে। তখন সে আবার ফিরে এসে বলবে, ‘হে প্রভু! জান্নাত তো ভরতি দেখলাম।’ তখন আল্লাহ আযযা অজাল্ল বলবেন, “যাও জান্নাতে প্রবেশ কর।” তোমার জন্য থাকল পৃথিবীর সমতুল্য এবং তার দশগুন (পরিমাণ বিশাল জান্নাত)! অথবা তোমার জন্য থাকল পৃথিবীর দশগুন (পরিমাণ বিশাল জান্নাত রইল)! তখন সে বলবে, ‘হে প্রভু! তুমি কি আমার সাথে ঠাট্টা করছ? অথবা আমার সাথে হাসি-মজাক করছ অথচ তুমি বাদশাহ (হাসি-ঠাট্টা তোমাকে শোভা দেয় না)।’ বর্ণনাকারী বলেন, তখন আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে এমনভাবে হাসতে দেখলাম যে, তাঁর চোয়ালের দাঁতগুলি প্রকাশিত হয়ে গেল। তিনি বললেন, “এ হল সর্বনিম্ন মানের জান্নাতী।” (সহীহুল বুখারী ৬৫৭১, ৭৫১১, মুসলিম ১৮৬)

৬) আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেছেন, “নিশ্চয় জান্নাতে মু’মিনদের জন্য একটি শূন্যগর্ভ মোতির তাঁবু থাকবে, যার দৈর্ঘ হবে ষাট মাইল। এর মধ্যে মু’মিনদের জন্য একাধিক স্ত্রী থাকবে। যাদের সকলের সাথে মু’মিন সহবাস করবে। কিন্তু তাদের কেউ কাউকে দেখতে পাবে না।” (সহীহুল বুখারী ৩২৪৩,৪৮৭৮,৪৮৮০ মুসলিম ১৮০)

৭) আবূ সাঈদ খুদরী হতে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেছেন, “জান্নাতের মধ্যে এমন একটি বৃক্ষ আছে, যার ছায়ায় কোন আরোহী উৎকৃষ্ট, বিশেষভাবে প্রতিপালিত হালকা দেহের দ্রুতগামী ঘোড়ায় চড়ে একশো বছর চললেও তা অতিক্রম করতে সক্ষম হবে না।” (সহীহুল বুখারী ৬৫৫৩, মুসলিম ২৮২৮)

৮) এটিকেই আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বুখারী-মুসলিম সন্তেয়নে বর্ণনা করেছেন যে, “একটি সওয়ার (অশ্বারোহী) তার ছায়ায় একশো বছর ব্যাপী চললেও তা অতিক্রম করতে পারবে না।”

৯) উক্ত রাবী (আবূ সাইদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেছেন, “অবশ্যই জান্নাতীগন তাদের উপরের বালাখানায় অধিবাসীদের এমনভাবে দেখতে পাবে, যেমন তোমরা আকাশের পূর্ব অথবা পশ্চিম দিগন্তে উজ্জ্বল অস্তগামী তারকা গভীর দৃষ্টিতে দেখতে পাও। এটি হবে তাদের মর্যাদার ব্যবধানের জন্য।” সাহাবীগণ বলেন, “হে আল্লাহর রসূল! এ তো নবীগনের স্থান; তাঁরা ছাড়া অন্যরা সেখানে পৌছতে পারবে না।” তিনি বলেন, “অবশ্যই, সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ আছে! সেই লোকরাও (পৌছতে পারবে) যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান রেখে রসূলগনকে সত্য বলে বিশ্বাস করেছে।” (সহীহুল বুখারী ৩২৫৬,৬৫৫৬, মুসলিম ২৮৩০,২৮৩১)

১০) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেছেন, “জান্নাতে ধনুক পরিমান স্থান (দুনিয়ার) যেসব বস্তুর উপর সূর্য উদিত কিম্বা অস্তমিত হচ্ছে সেসব বস্তু চেয়েও উওম।” (সহীহুল বুখারী ২৭৯৩,৩২৫৩,৪৮৮১, মুসলিম ১৮৮২,২৮২৬)

১১) জাবের (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “জান্নাতবাসীরা জান্নাতের মধ্যে পানাহার করবে; কিন্তু পেশাব-পায়খানা করবে না, তারা নাক ঝরাবে না, পেশাবও করবে না। বরং তাদের ঐ খাবার ঢেকুর ও কস্তুরীবৎ সুগন্ধময় ঘাম (হয়ে দেহ থেকে বের হয়ে যাবে)। তাদের মধ্যে তাসবীহ ও তাকবীর পড়ার স্বয়ংক্রিয় শক্তি প্রক্ষিপ্ত হবে, যেমন শ্বাসক্রিয়ার শক্তি স্বয়ংক্রিয় করা হয়েছে।” (মুসলিম ২৮৩৫, আবূ দাউদ ৪৭৪১)

১২) সাহল ইবনে সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “জান্নাতীগণ জান্নাতের বালাখানাগুলিকে এমন গভীরভাবে দেখবে, যেভাবে তোমরা আকাশের তারকা দেখে থাক।” (সহীহুল বুখারী ৩২৫৬,৬৫৫৬,মুসলিম ২৮৩০, ২৮৩১)

১৩) উক্ত রাবী (রাঃ)হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর এমন এক মজলিসে উপস্থিত ছিলাম, যেখানে তিনি জান্নাত সম্পর্কে আলোচনা করছিলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি তা সমাপ্ত করলেন এবং আলোচনার শেষে বললেন, “জান্নাতে এমন নিয়ামত (সুখ-সামগ্রী) বিদ্যমান আছে যা কোন চোখ দেখেনি, যা কোন কান শুনেনি এবং যা কোন মানুষের মনে তার ধারণার উদ্রেকও হয়নি। তারপর তিনি এই আয়াত পাঠ করলেন, “তাঁরা শয্যাত্যাগ করে আকাঙ্খা ও আশংকার সাথে তাদের প্রতিপালককে ডাকে এবং আমি তাদের যা রুযি প্রদান করেছি তা হতে তাঁরা দান করে। কেউই জানে না তার জন্য তার কৃতকর্মের বিনিময়ে স্বরূপ নয়ন-প্রীতিকর কী পুরস্কার লুকিয়ে রাখা হয়েছে।” (সূরা সাজদাহ ১৬-১৭, মুসলিম ২৮২৫)

১৪) বুখারী-মুসলিমের আর এক বর্ণনায় আছে যে, “(জান্নাতে) তাদের পাএ হবে স্বর্ণের, তাদের গায়ের ঘাম হবে কস্তুরীর ন্যায় সুগন্ধময়। তাদের প্রত্যেকের জন্য এমন দু’জন স্ত্রী থাকবে, যাদের সৌন্দর্যের দরুন মাংস ভেদ করে পায়ের নলার হাড়ের মজ্জা দেখা যাবে। তাদের মধ্যে কোন মতভেদ থাকবে না। পারস্পরিক বিদ্বেষ থাকবে না। তাদের সকলের অন্তর একটি অন্তরের মত হবে। তারা সকাল-সন্ধ্যায় তাসবীহ পাঠে রত থাকবে।”

১৫) আবূ সাইদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেছেন, “মহান প্রভু জান্নাতীদেরকে সম্বোধন করে বলবেন, ‘হে জান্নাতের অধিবাসিগণ!’ তাঁরা উত্তরে বলবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমি হাযির আছি, যাবতীয় সুখ ও কল্যাণ তোমার হাতে আছে।’ তখন আল্লাহ তাআলা বলবেন, ‘তোমরা কি সন্তুষ্ট হয়েছ?’ তাঁরা বলবে, ‘আমাদের কি হয়েছে যে, সন্তুষ্ট হব না? হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি তো আমাদেরকে সেই জিনিস দান করেছ, যা তোমার কোন সৃষ্টিকে দান করনি।’ তখন তিনি বলবেন, ‘এর চেয়েও উত্তম কিছু তোমাদেরকে দান করব কি?’ তারা বলবে, ‘এর চেয়েও উত্তম বস্তু আর কী হতে পারে?’ মহান প্রভু জবাবে বলবেন, ‘তোমাদের উপর আমার সন্তুষ্টি অনিবার্য করব। তারপর আমি তোমাদের প্রতি কখনো অসন্তুষ্ট হব না।” (সহীহুল বুখারী ৬৫৪৯,৭৫১৮,মুসলিম ১৮৩)

১৬) জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক রাতে আমরা রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর কাছে ছিলাম। হঠাৎ তিনি পূর্নিমার রাতের চাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেন, “শোন! নিশ্চয় তোমরা তোমাদের প্রতিপালকে তেমনি স্পষ্ট দেখতে পাবে, যেমন স্পষ্ট ঐ চাঁদকে দেখতে পাচ্ছ। তাঁকে দেখতে তোমরা কোন ভিড়ের সম্মুখহীন হবে না।” (সহীহুল বুখারী ৫৫৪, ৫৭৩, ৪৮৫১,মুসলিম ৬৩৩)

১৭) সুহাইব (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (রাঃ) বলেছেন, “জান্নাতীরা যখন জান্নাতে প্রবেশ করে যাবে, তখন মহান বরকতময় আল্লাহ বলবেন, ‘তোমরা কি চাও যে, আমি তোমাদের জন্য আরো কিছু বেশি দেই?’ তারা বলবে, ‘তুমি কি আমাদের মুখমণ্ডল উজ্জ্বল করে দাওনি? আমাদেরকে তুমি জান্নাতে প্রবিষ্ট করনি এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দাওনি?’ তারপর আল্লাহ (হঠাৎ) পর্দা সরিয়ে দেবেন (এবং তারা তাঁর চেহারা দর্শন লাভ করবে)। সুতরাং জান্নাতের লব্ধ যাবতীয় সুখ-সামগ্রীর মধ্যে জান্নাতীদের নিকট তাদের প্রভুর দর্শন (দীদার)ই হবে সবচেয়ে বেশী প্রিয়।” (মুসলিম ১৮১)

মহান আল্লাহ বলেছেন, “নিশ্চয়ই যারা বিশ্বাস করেছে এবং ভাল কাজ করেছে তাদের প্রতিপালক তাদের বিশ্বাসের কারনে তাদেরকে পথ প্রদর্শন করবেন, শান্তির উদ্যানসমূহে তাদের (বাসস্থানের) তলদেশ দিয়ে নদীমালা প্রবাহিত থাকবে। সেখানে তাদের বাক্য হবে, ‘সুবহানাকাল্লাহুম্মা’ (হে আল্লাহ! তুমি মহান পবিত্র)! এবং পরস্পরের অভিবাদন হবে সালাম। আর তাদের শেষ বাক্য হবে, ‘আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন’ (সমস্ত প্রশংসা সারা জাহানের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য)”। (সূরা ইউনুস ৯-১০)

Learn Quran, Read Quran, Download Quran. Download Bangla Waz Mahfil

Post a Comment

Post a Comment (0)

Previous Next